Who We Are

আপনজনদের ছেড়ে দেশ থেকে যারা বিদেশে পাড়ি জমান, শুরুতে তারা বড় অসহায় হয়ে পড়েন। হয়ে পড়েন নিঃসঙ্গ। যখন সকালে ঘুম ভেঙে কাজে যাওয়ার আগে প্রাতরাশে বসেন, যখন কাজের বিরতিতে দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজে বসেন, যখন কাজ থেকে বাসায় ফিরে রাতে নৈশভোজে করতে বসেন, তখন নিঃসঙ্গতা তার পাশের চেয়ারটিতে বসে নিঃশব্দে হাসতে থাকে। ‘রুমমেট’ নামের অপরিচিত মানুষটি সে নিঃসঙ্গতা দূর করতে পারে না। তখন তার আপন মানুষদের কাছে পেতে ইচ্ছে করে। তখন কোনও প্রিয় মানুষটির  মমতামাখানো হাতে ভাতের থালায় তরকারির প্রিয় পদগুলো তুলে দিচ্ছেন- দৃশ্যটি বুকের ভেতরে খুব করে বাজে।

AKM Fazlul Hoque, President of New H&S

এসব স্মৃতিগুলো চোখ ভরিয়ে দেয় প্রবাসী জনদের। ভাষার সঙ্গে স্বাদটাও তাদের বুকের গহীণে হাহাকার তোলে। শীল পাটায় শুকনো মরিচ দিয়ে পিষে পিষে তৈরি করা পুঁটি মাছের ভর্তার জন্যে তার মন আকুলি বিকুলি করে। খুব করে মসলা দিয়ে রাধা পাবদা মাছের চাপ চাপ ঝোল দিয়ে দু লোকমা ভাত খেতে চেয়ে তার বুকের ভেতরটা শুকিয়ে যায়। বিজাতীয় দেশে বিজাতীয় খাবারে যখন জিভের সঙ্গে সঙ্গে পাকস্থলীও ক্লান্ত হয়ে যায়, তখন খুব ইচ্ছে করে চোখে জল আনা ঝাঁঝঅলা সরিষার তেল আর ধানী কাঁচামরিচে মাখানো আলুভর্তা দেশী চালের গরম ভাপ ওঠা ভাতের সঙ্গে খুব করে মেখে, পাতলা মসুরের ডালের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে। ইচ্ছে করে পাটাপুতায় থানকুনি পাতা বেটে বানানো চাটনি দিয়ে এক থালা ভাত খেয়ে ফেলতে।

আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে সদ্য আমেরিকায় এসে জনাব একেএম ফজলুল হকেরও ঠিক এমন অনুভূতিই হয়েছিল। হয়ে পড়েছিলেন বড় একলা আর নিঃসঙ্গ। তিনি উপলব্ধি করলেন এ হতাশা আর অতৃপ্তি তার একলার নয়। দেখলেন ইচ্ছেরা তার একলারই বুকের ভেতরটা শুকিয়ে ফেলে না। আশপাশে যারা তার মতো প্রবাসী, তাদেরও একই রকম হয়। তবে ফজলুল হক আর সকলের মতো হা হুতাশ-হাহাকারে দমে না থেকে  খুঁজতে থাকলেন এর সমাধান। পেয়েও গেলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন বাংলাদেশ থেকে ভোজ্য পণ্যগুলো আমেরিকায় নিয়ে আসবেন।

আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে কাজটি সহজ ছিল না। কিন্তু ফজলুল হক পিছু হটলেন না। দুরূহ যোগাযোগ মাধ্যমেই বাংলাদেশের ভোজ্য পণ্য বাজারজাত করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। সাতকাহন করে একটা দুটা করে পণ্য নিয়ে এলেন সুদূর আমেরিকায়।

ব্যবসা নয়, দেশজ ভালোবাসা আর দেশজ সংস্কৃতির প্রতি প্রগাঢ় নাড়ীর টান থেকে উৎপত্তি ‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’-এর ভাবনার। আর সেবা করার মানসিকতা থেকে শুরু হলো ‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’-এর পথচলা। আজকে  ‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’-এর সে পথচলা নির্মাণ করেছে দুই দেশ- আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের মেলবন্ধন। আমেরিকায় ‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের অনানুষ্ঠানিক প্রতিনিধি। কেবল বাঙালি নয়, আমেরিকানসহ পৃথিবীর বহু জাতি আর ভাষার মানুষ বাংলাদেশের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে, চিনেছে, জেনেছে  ‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’-এর হাত ধরেই। ধনে পাতা থেকে মুলা শাক, কাচকি মাছ থেকে ইলিশ, বাটার চপ্পল থেকে শরীফ ছাতা কিংবা আরএফএলের পানির জগ – কি নেই? আমেরিকায় আপন মাতৃভূমি বাংলাদেশের সকল ধরণের পণ্যের শীর্ষ পরিবেশক  ‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’ ।

কিন্তু পৃথিবীর বহু জাতি আর ভাষার মানুষদের সঙ্গে ফজলুল হকের এই পরিচিতির সঙ্গে যখন দেশজ সংস্কৃতি মিশল, তখন তার ভেতরটা সেইসব ভিন্ন জাতির মানুষদের দেশজ আকুলতা ছুঁয়েছিল। আপন প্রতিষ্ঠান নিয়ে পৌঁছে গেলেন তাদের দেশে।

‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’ এখন আমেরিকায় বাজারজাত করছে সেসব দেশের এগার শ’য়েরও বেশী পণ্য। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, তুর্কি, ভারত, থাইওল্যান্ডসহ ইউরোপের অনেক দেশ।
‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’-এর এই পথচলা নিরবিচ্ছিনভাবে অব্যাহত রাখতে সকল শুভানুধ্যায়ীদের জন্য আমাদের আন্তরিক অভিবাদন।  ‘নিউ হক অ্যান্ড সন্স’-এর সঙ্গেই থাকুন।

30+

Years Successfully In Business


327+

Happy Clients


1100+

Product Items